জাবিতে নির্যাতনে ‘মানষিক ভারসাম্য’ হারালো শিক্ষার্থী

জাবিতে নির্যাতনে ‘মানষিক ভারসাম্য’ হারালো শিক্ষার্থী

জাবি প্রতিনিধি:-
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) ছাত্র মিজানুর রাহমান। মিজানুরের বন্ধুদের সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে পরিচিত হওয়ার জন্য (সিটিং) ডাকে। সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন (র‌্যাগিং) করে। এ সময় মিজানুরকেও অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়াসহ শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়া সংযুক্ত শহীদ সালাম বরকত হল ছেড়ে আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হলে তাকে আসতে বলে। না আসলে তাকে হত্যা ও গুম করার হুমকি দেয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে আবারও তাকে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা মানসিক নির্যাতন ও হুমকি দেয়। যার কারণে নবীন শিক্ষার্থী মিজানুর ভয় পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
জাবিতে নির্যাতনে ‘মানষিক ভারসাম্য’ হারালো শিক্ষার্থীমিজানুরের সহপাঠীদের সূত্রে আরো জানা যায়, এ ঘটনার পর মিজানুর বৃহস্পতিবার রাত থেকে হলে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে দেখতে আসলে ‘তুই আমার জীবন শেষ করেছিস, তোরা আমাকে মেরে ফেলবি’ এমন অসংলগ্ন কথা বলতে থাকে। এমনকি শুক্রবার দুপুরে সে তার বন্ধুদেকে বলে ‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’ ‘গুম করে ফেলবে’ ‘মরার আগে একটু মায়ের সাথে দেখা করতে দেন ভাই ’।
এমন অবস্থায় পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে রাতে তার বাবা ও চাচা ক্যাম্পাসে আসেন। তারপর ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য গাড়িতে উঠাতে চাইলে উদ্ভট আচরণ করে মিজানুর। মিজানুর তারা বাবা ও চাচাকে প্রথমে চিনতে পারছিল না। অনেক পরে চিনতে পারে। এ সময় ছেলের এমন অবস্থা দেখে চাপা কান্নায় ভেঙে পড়েন মিজানুরের বাবা।
চাচা জয়নাল আবেদীনের কাছে মিজানুরের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিজানুরের অবস্থা এখন আরো খারাপ। সে কোনও স্বজনকেই চিনতে পারছে না। এমনকি কাউকে দেখলেই সে ভয় পাচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মানসিক ডাক্তারের কাছে নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে র‌্যাগিংয়ের সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে শুক্রবার রাত ১টার দিকে বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের মামুন, হিমেল, সুদীপ্ত ও ক্লাস প্রতিনিধি কে আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদকারী ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে। তবে তাদের কথা শুনে যতোটুকু বোঝা গেছে তারা র‌্যাগিংয়ের সাথে জাড়িত ছিল।’
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় একাডেমিক বৈঠক বসবে। সেখানে ঘটনার সাথে জাড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানাবো।’
এদিকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment